বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫: তারিখ, ফুল প্রার্থী তালিকা ও প্রধান ইস্যু একসাথে

Estimated reading time: 1 minutes

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ (তারিখ, প্রার্থী তালিকা ও প্রধান ইস্যুগুলো এক নজরে)

২০২৫ সালের জন্য বিহার বিধানসভা নির্বাচন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে। বিহার শুধু একটি রাজ্য নয়, ভারতের রাজনৈতিক সমীকরণে এর অবদান বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যসভা প্রধান নীতি শর্মার ভূমিকা, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে নতুন মাত্রা এনেছে।

এবারের নির্বাচনে কর্মসংস্থান, তরুণদের অভিবাসন, ও সামাজিক ন্যায়বিচার মূল ইস্যু। এনডিএ ও মহাগঠবন্ধন, দুটি বড় শিবির ভোটারদের আস্থা পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে, আর জনসুরাজ পার্টি আলাদাভাবে নজর কাড়ছে। বিহারে যেসব সিদ্ধান্ত হয়, তা শুধু রাজ্যের ভবিষ্যৎই নয়, দেশের রাজনীতিও একসাথে বদলে দিতে পারে।

ভিডিও বিশ্লেষণ দেখতে ক্লিক করুন: Bihar Election 2025 Analysis on YouTube

নির্বাচনের পটভূমি ও সময়সূচি

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ শুধু রাজ্যের রাজনীতি নয়, দেশের দৃষ্টিকোণ থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে মোট ২৪৩টি আসনে, যেখানে প্রায় ৭ কোটি ৩০ লাখ ভোটার সিদ্ধান্ত নেবেন কারা রাজ্যের শাসনভার নেবেন। আসুন সরাসরি নির্বাচনের পটভূমি, ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া এবং নির্ধারিত সময়সূচি নিয়ে আলোচনা করি।

ইতিহাসিক পটভূমি: বিহারের প্রাচীন সাম্রাজ্য, কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি এবং পূর্বের নির্বাচনগুলোর সংক্ষিপ্ত সারাংশ

বিহারের ইতিহাস ভারতবর্ষের অন্যতম প্রাচীন। বৌদ্ধ, মগধ ও মৌর্য সাম্রাজ্যের মাধ্যমে প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতা ও রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল বিহার। এখনো বিহারের অর্থনীতির মূলভিত্তি কৃষিই, এখানের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বাস করেন এবং তাদের আয়ের বড় অংশ আসে কৃষি কাজ থেকে।

নির্বাচনের প্রসঙ্গে বলতে গেলে বিহার ভারতের রাজনৈতিক মানচিত্রে পরিবর্তন আনার জন্য পরিচিত। ১৯৭৭ সালে বিহার ছিল প্রথম রাজ্য যেখানে গরীব ও পেছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটে। গত সংকীর্ণ কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গেছে:

  • দলবদল ও জোট রাজনীতি মারাত্মকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
  • করাপশন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও উন্নয়ন ইস্যু রয়ে গেছে।
  • বিগত দুই দশক ধরে দুটি বড় গোষ্ঠী— এনডিএ (BJP, JDU, LJP) ও মহাগঠবন্ধন (RJD, Congress, বাম) মূল প্রতিদ্বন্দ্বী; আধুনিক কালে জনসুরাজ পার্টিও গুরুত্ব পেয়েছে।

বিস্তারিত জানতে পারেন ২০২৫ বিহার বিধানসভা নির্বাচন উইকিপিডিয়াতে

ভোটার তালিকা ও SIR: বিশেষ তীব্র সংশোধন (SIR) কী, কোন নথি দরকার এবং এতে কী চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে

নতুন ভোটার তালিকা তৈরিতে এবার বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে SIR বা Special Intensive Revision প্রক্রিয়ায়।

এসআইআর (SIR) কী?

  • নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি, ভুল সংশোধন ও বাদপড়া নাম পুর্নস্থাপনে বিশেষ অভিযানে কাজ চলে।
  • ২০২৫ সালের নির্বাচন সামনে রেখে জুন মাসেই নতুন তালিকা সংশোধন শুরু হয়।
  • যারা ভোটার তালিকায় নাম তুলতে চায়, তাদের জন্ম সনদ, আধার, ভোটার আইডি অথবা রেশন কার্ডের মতো ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়।

এসআইআর নিয়ে চ্যালেঞ্জগুলো কী?

  • বিরোধী শিবিরের অভিযোগ— বহু সংখ্যালঘু, শ্রমজীবী ও প্রবাসী মানুষ এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।
  • ডকুমেন্ট প্রসেসিংয়ে ধীরগতি ও ভুলভ্রান্তি।
  • কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক চাপ বা পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এসেছে।

বিশদ তথ্য পেতে চাইলে দেখুন Bihar SIR 2025 প্রসঙ্গে PIB প্রেস রিলিজ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে SIR নিয়ে প্রতিবেদন এবং বিহার ভোটার তালিকা সংশোধনসংক্রান্ত আপডেট

নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখ: ইলেকশন কমিশনের ঘোষণা করা তারিখ, ফেজ‑১ ভোটের সময় এবং ফলাফল ঘোষণার প্রত্যাশিত সময়সূচি

বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৫ সালের নভেম্বর মাসে। নির্বাচন কমিশন ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচন অক্টোবরে বা নভেম্বরের শুরুতে আয়োজন করবে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। এবার ভোট হয়তো ২-৩ ধাপে নেওয়া হবে, কারণ একই সময় দীপাবলি ও ছট পূজা রয়েছে।

প্রধান সময়সূচি:

  • ভোট গ্রহণ: অক্টোবর–নভেম্বর ২০২৫ (সম্ভাব্য)
  • ফেজ-১ ভোট: নির্দিষ্ট তারিখ কমিশন এখনও ঘোষণা করেনি, তবে প্রথম দফা অক্টোবরে হতে পারে।
  • ফলাফল ঘোষণা: নভেম্বরের শেষ সপ্তাহেই ফল প্রকাশের সম্ভাবনা বেশি।

২৭ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্রে প্রায় ৭.৩ কোটি ভোটার এবার ভোট দিবেন। ২৪৩টি বিধানসভা আসনে ভিন্ন ভিন্ন দিন ভোটগ্রহণ হতে পারে। সমস্ত নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ স্ক্যাজুয়াল ও তথ্য জানতে চাইলে নজর দিন Bihar Legislative Assembly Election ২০২৫ উইকিপিডিয়া পাতায় এবং India Today-এর আসনভিত্তিক কনস্টিটুয়েন্সি আপডেট এ।

এভাবেই বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ এর মৌলিক বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়। প্রতিটি ভোট, প্রতিটি তালিকা সংশোধন এবং প্রতিটি সময়পঞ্জি এই নির্বাচনে জনগণের বিশ্বাস ও আগ্রহকে তুলে ধরে।

প্রধান রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর তালিকা

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এ অংশ নিচ্ছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল ও নতুন মুখ। ভোটের ময়দানে এবার অনেকেই পরিচিত পুরনো খেলোয়াড়, আবার নতুন চিন্তা ও দলীয় সংযোজনও ঘটেছে। এই অংশে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো সব শিবিরের নেতৃত্ব, মূল প্রার্থী ও কৌশলের হালচাল।

এনডিএ দল: বিজেপি ও জেডিইউ’র কৌশল, প্রধান প্রার্থীর নাম এবং তাদের নির্বাচনী জয়ী সম্ভাবনা

বিহারে এনডিএ (এনডিএ: BJP ও JDU) এখনো শাসক জোট এবং তাদের নির্ভরযোগ্য ভোট ব্যাংক রয়েছে EBC, মহাদলিত ও নারী ভোটারে। মুখ্য মুখ দুটি— নীতীশ কুমার (JDU) ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নীতীশ কুমার নারী ও গ্রামীণ উন্নয়নের ইস্যু সামনে তুলে ধরছেন। বিজেপির লক্ষ্য যুব সমাজ ও হিন্দু ভোটারদের হৃদয়ে পৌঁছানো।

এবার প্রার্থী তালিকায় বেশ কিছু চমক আছে। যেমন:

  • নীতীশ কুমার (JDU): চিন্নাট নতুন মুখ হলেও নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী ক্যাম্পেইনের ফ্রন্টে রাখা হয়েছে।
  • সুশীল কুমার মোদি/সঞ্জয় জয়সওয়াল (BJP): বিজেপির সিনিয়র প্রার্থী, রাজ্য ও কেন্দ্রে মিশ্রিত নেতৃত্ব।
  • চিরাগ পাসওয়ান (LJP): এনডিএ-র সহযোগী চেহারা, পশ্চিম বিহারে জোর।
  • জিতেন রাম মাঝি (HAM): মহাদলিত ভোটে ফোকাস।

এনডিএর আসন ভাগাভাগি চলছেই, তবে সম্ভাব্য ভাবে BJP ও JDU প্রায় ১০০-১০৫টি করে আসনে লড়বে। মহিলা, যুবক এবং গ্রামীণ ভোট এই জোটের বড় হাতিয়ার। বিহার বিধানসভার দলীয় তালিকা, প্রার্থীর নাম ও বিস্তারিত জানতে Times of India ক্যান্ডিডেটস পেজ এবং JDU ক্যান্ডিডেট লিস্ট এখানে দেখতে পারেন।

ইন্ডিয়া ব্লক: আরজেডিজি ও কংগ্রেসের প্রার্থীদের তালিকা, তেজস্বি যাদবের ভূমিকা এবং ম্যান্ডেট শেয়ার উল্লেখ করুন

বিরোধী মঞ্চে রয়েছে INDIA ব্লক (মহাগঠবন্ধন)— যার মূল অংশ RJD ও কংগ্রেস। তেজস্বি যাদব এই অংশের ফোকাল পয়েন্ট, যিনি যুব ভোটারদের কাছে আশার প্রতীক। RJD এবার প্রচলিত মুসলিম-যাদব ভোটের সাথে আরও EBC, OBC, কুশওয়াহা, ধানুক, মল্লাহ ও কিছু নির্দলিত দলের সমন্বয়ে ভোট ঘরে তুলে আনার চেষ্টা করছে।

INDIA ব্লকে কংগ্রেসও আছে, তারা মূলত শহুরে, মুসলিম ও দলিত ভোটার নিয়ে সক্রিয়। CPI(ML) ও অন্যান্য বাম গোষ্ঠীও সঙ্গে আছে, এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে জয়ী হতে পারে।

ম্যান্ডেট ভাগাভাগি বর্তমানে এভাবে হচ্ছে:

  • RJD: সর্বাধিক আসনে।
  • কংগ্রেস: প্রায় ৩০-৪০টি আসনে।
  • CPI(ML), অন্যান্য বাম ও ছোট দল: ২০-৩০টি আসনে।

তেজস্বি যাদবের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ইস্যু— চাকরির প্রতিশ্রুতি, ত্রাণনীতি আর কাস্ট সেন্সাস নিয়ে ক্যাম্পেইন শক্তিশালী। বিস্তারিত তালিকা ও প্রার্থীদের নাম পাওয়া যাবে উইকিপিডিয়ার বিহার ইলেকশন ২০২৫-এ এবং বিহার ইলেকশন আধিকারিকের ক্যান্ডিডেট পিডিএফ-এ

অন্যান্য পার্টি: লেজপিএ (রাম ভিল), হাম (হিন্দুয়ানি আওয়াম মরচা) ও নতুন জন সুরাজ পার্টির প্রার্থী ও নীতিগুলি সংক্ষেপে বর্ণনা করুন

বড় দুই দলের বাইরে, কয়েকটি ছোট দল ও নতুন এন্ট্রি ভোটারকে ভাবাচ্ছে—

  • লেজপিএ (রামভিলাস): চিরাগ পাসওয়ান নেতৃত্বে লেজপিএ তরুণ ও পশ্চিম বিহার অঞ্চলে বিজেপি-সহযোগী। দলটি শিশুশ্রম, পাট শিল্প পুনরুজ্জীবন ও কলেজ ছাত্রছাত্রী ইস্যু নিয়ে সরব।
  • হাম (Jitan Ram Manjhi’র ‘হিন্দুয়ানি আওয়াম মরচা’): যারা মহাদলিত সমাজ, বিশেষত মুসলিম ও দলিত সংরক্ষণে ফোকাস করছে, এনডিএর সঙ্গেও আছে।
  • জন সুরাজ পার্টি (প্রশান্ত কিশোর): এই দল স্বাধীনভাবেই সব আসনে দাঁড়াচ্ছে। তারা মানুষের বাড়ি বাড়ি ক্যাম্পেইনে, দুর্নীতিমুক্ত গভার্ন্যান্স আর স্থানীয় কর্মসংস্থান নিয়ে কথা বলছে। বিশেষ করে তরুণ ও শিক্ষিতদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।

এছাড়া কয়েকটি আঞ্চলিক ছোট দলও নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে। কাস্ট, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান—এই তিনটি ইস্যুতেই সবাই টানাটানি করছে।

এই তালিকা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ আপনাকে ধাপে ধাপে বিহারের বৃহত্তর রাজনৈতিক চিত্র স্পষ্ট করে দেবে। বিস্তারিত ক্যান্ডিডেট নাম ও তথ্যের জন্য হিন্দুস্তান টাইমসের নির্বাচন কভারেজ দেখতে পারেন।

প্রধান ইস্যু ও ভোটার উদ্বেগ

২০২৫ বিহার বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের মনে নানা উদ্বেগ ও প্রশ্ন। চাকরির সুযোগ, সামাজিক ন্যায়, কাস্টি গণনা এবং ভোটার তালিকা নিয়ে বিতর্ক- সবই নির্বাচনী লড়াইয়ের মাঠে গরম ইস্যু। আসুন এই অংশে দেখে নিই, বিহারের কিছু প্রধান ইস্যু এবং ভোটারদের উদ্বেগে রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ নিচ্ছে।

বেকারত্ব ও যুব কর্মসংস্থান: কীভাবে বিভিন্ন দল কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে তা ব্যাখ্যা করুন

বিহারে তরুণদের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা চাকরি। সম্প্রতি কোচিং নগরী বা প্রবাসী কাজের জন্য বিহার প্রসিদ্ধ হলেও, আজও বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।

  • এনডিএ (BJP-JDU): মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সাম্প্রতিক ঘোষণায় বলেছেন, তারা আগামী পাঁচ বছরে ১ কোটির বেশি যুবককে চাকরি ও রোজগারের সুযোগ তৈরি করবে। ইতিমধ্যে সরকারি চাকরির সংখ্যা দ্বিগুণের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, পাশাপাশি স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও স্টার্টআপ পরিকল্পনায় জোর দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত পড়ুন
  • RJD-কংগ্রেস (INDIA ব্লক): তেজস্বি যাদবের নেতৃত্বে সরকারি চাকরি ও নিয়োগ চালু আর বড় শিল্প স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে লক্ষাধিক সরকারি পদ পূরণ, নতুন কল-কারখানা, এমনকি রেশন কার্ড সহ নানা সামাজিক চাকরিওয়ালার কথা বলা হয়েছে। এই রিলেটেড খবর দেখুন
  • জন সুরাজ ও অন্যান্য দল: বিহারের স্থানীয় তরুণদের জন্য ‘In-State Value’ (ISV) অথবা নিজ রাজ্যে কাজ ও শিক্ষার ব্যবস্থা তৈরির উপর ফোকাস করছে। নতুন উদ্যোক্তা প্রকল্প ও প্রয়াসেও ছাড় দিচ্ছে। আরও পড়ুন কেন ISV নিয়ে সব দল এত গুরুত্ব দিচ্ছে

তরুণ ভোটাররা এখন কাস্টি-ধর্মের বাইরে গিয়ে কাজ, মর্যাদা ও বাস্তব উন্নয়ন দেখতেই ভোট ফেলছে। জেনে নিন কেন বিহারের তরুণরা এবারে শুধু কাস্ট নয়, কর্মসংস্থানের উপর জোর দিচ্ছে

কাস্টি ও সামাজিক ন্যায়: কাস্টি গণনা, সামাজিক ন্যায় এবং রিলিজনাল ইস্যু নিয়ে পার্টি গুলোর অবস্থান বর্ণনা করুন

কাস্টি গণনা ও সামাজিক ন্যায় এই নির্বাচনের সবচেয়ে উত্তপ্ত ইস্যু। বিগত বছরগুলোতে বিহার কাস্ট সেন্সাস নিয়ে জাতীয় আলোচনায় এসেছে।

  • কাস্টি গণনা: দীর্ঘদিন পর কেন্দ্রীয় সরকার রাজি হয়েছে কাস্টি তথ্য পরবর্তী জনগণনা বা সেন্সাসে রাখার বিষয়ে। বিজেপি আগে বিরোধিতা করলেও এখন নির্বাচনের আগে সামাজিক মামলার গুরুত্ব দিয়ে কাস্টি সেন্সাস বাস্তবায়নে সায় দিয়েছে। পড়ুন: BJP অবশেষে কেন কাস্টি সেন্সাসে সম্মত হলো
  • সামাজিক ন্যায়: RJD, কংগ্রেসসহ মহাগঠবন্ধন সামাজিক ন্যায়কে ইশতেহারের কেন্দ্রবিন্দু করেছে। সমাজের পিছিয়ে থাকা শ্রেণির জন্য শিক্ষায় সংরক্ষণ, সরকারি চাকরি ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতের কথা জোর দিয়ে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিজেপিও নির্বাচনী কম্পেইনে সামাজিক ন্যায় সামনে রেখেছে, তবে তারা জাতিভিত্তিক রাজনীতির বদলে সার্বজনীন উন্নয়ন, গরিব, মহাদলিত, নারী ও মুসলিম উন্নয়নের ছক এঁকেছে। আরও পড়ুন: বিজেপির সমাজিক ন্যায় ফোকাস
  • রিলিজনাল ইস্যু: বিহারের কিছু এলাকায় আঞ্চলিক-ভিত্তিক দাবিদাওয়াও জোরদার। ভাষা, সংস্কৃতি ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা নিয়েও দলগুলো সোচ্চার।

এই কাস্ট-সামাজিক ন্যায় নিয়ে দলগুলোর অবস্থান ২০২৫ নির্বাচনী ফলাফলকেও প্রভাবিত করতে পারে। জাতীয় পর্যায়ে কাস্ট সেন্সাস ও সংরক্ষণের গুরুত্ব নিয়ে পড়তে পারেন

ভোটার তালিকা বিতর্ক: SIR প্রক্রিয়া, ভোটার বাদ পড়া এবং সংশ্লিষ্ট দলগুলোর অভিযোগ ও ইসিসি’র প্রতিক্রিয়া উপস্থাপন করুন

ভোটার তালিকা ও SIR (Special Intensive Revision) নিয়েও বিহারে বিতর্ক তুঙ্গে। নির্বাচন কমিশন জুন-জুলাই মাসে বিশেষ সংশোধন শুরু করে। এতে প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম অস্থায়ীভাবে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে— যা নিয়ে রাজ্যে হইচই পড়ে গেছে।

  • বিরোধী পক্ষের অভিযোগ: কংগ্রেস, RJD ও অন্যান্য বিরোধী দল দাবি করছে, মুসলিম, দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ অনিচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ পড়েছে। অভিযোগ, সময় স্বল্পতা ও বেশি ডকুমেন্ট চাওয়ার কারণে অনেকে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি।
  • SIR-এ ইসির উদ্বেগ: নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, অপসারণের মধ্যে আছে—মৃত, ডুপ্লিকেট, স্থানান্তরিত ভোটার ও অনুপস্থিতি। ইতিমধ্যে ১.৪ লাখের বেশি দাবি-আপত্তি জমা পড়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বাকি সময় পর্যন্ত সংশোধনের সুযোগ থাকবে এবং অভিযোগগুলো ক্লিয়ার করা হবে। বিস্তারিত: ৬৫ লাখ নাম কাটা বিতর্ক ও ইসি’র বক্তব্য এই বিওডিসি রিপোর্টে
  • সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান: সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, শুধু আধার দেখালে ভোটার হিসেবে যোগ্যতা নির্ধারণ হবে না, অন্য কাগজও নিতে হবে। আদালত নির্বাচন কমিশনের ওপর “বিশ্বাস ঘাটতির” কথাও বলেছে, তবে ইসি নিশ্চয়তা দিয়েছে— প্রকৃত ভোটার যেন বাদ না যায় সেটা দেখা হচ্ছে। বাদপড়া নামের পুরো লিস্ট প্রকাশ হয়েছে এবং আপত্তি নেওয়া হচ্ছে। এখানে অফিশিয়াল প্রেসরিলিজ দেখুন

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি এক প্রেসব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, কোনো প্রকৃত ভোটার যাতে বাদ না পড়ে সে বিষয়ে সব রকম পদক্ষেপ চলবে। ইতিমধ্যে প্রায় ১.৬৫ লাখ আবেদন জমা পড়েছে এবং ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন ঠিক হয়েছে। আরও জানুন ইসির বক্তব্য ও বিরোধী অভিযোগ নিয়ে

এই ইস্যুতে ভোটাররাও উদ্বিগ্ন— কেউ নিজের ভোটাধিকার হারানোর ভয় পাচ্ছেন, কেউ আবার প্রতিটি দিক থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে চাইছেন।

এভাবে প্রতিটি ইস্যু, প্রতিটি বিতর্ক ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনে জনগণের মন ও ভোটে কী প্রভাব ফেলবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

ফলাফলের পূর্বাভাস ও রাজনৈতিক প্রভাব

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর ফলাফল ঘিরে প্রতিবারের মতো এবারও টান টান উত্তেজনা। কে আসবে সংখ্যাগরিষ্ঠতায়, আর সেটাই কেবল নয়, কে কোন জোটে থাকবে বা কীভাবে সরকার গঠন হবে- এই প্রশ্নে রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে বড় নাড়া পড়তে পারে। আসুন দেখি সাম্প্রতিক পূর্বাভাস, সম্ভাব্য রাজনৈতিক ব্যাখ্যা ও নীতিগত পালাবদলের আভাস।

মোট ম্যান্ডেট বিশ্লেষণ: প্রতিটি জোটের সম্ভাব্য সিট সংখ্যা, অর্ধেকের চেয়েও বেশি সিট জিতলে কী হবে তা ব্যাখ্যা

মোট ২৪৩ আসনের বিহারে সরকার গড়তে প্রয়োজন কমপক্ষে ১২২টি আসন। সাম্প্রতিক জনমত জরিপ ও ভোট পূর্বাভাস অনুযায়ী:

  • এনডিএ (BJP, JDU, LJP ইত্যাদি): সম্ভাব্য ১৩৬ – ১৪৫টি আসন পেতে পারে। BJP এককভাবে ৮০টির উপরে পৌঁছাতে পারে, JDU কিছুটা কমে প্রায় ৩০টি আসন পেতে পারে।
  • INDIA ব্লক (RJD, কংগ্রেস, বাম): ৭০-৮০টির মতো আসন পেতে পারে বলে ইঙ্গিত, RJD এখনো প্রধান শক্তি থাকলেও আসন কমতে পারে।
  • জন সুরাজ পার্টি ও অন্যান্য: নতুন এবং ছোট দলগুলি ১৫-২০ আসনের মতো ছিটকে নিতে পারে।

এই হিসেব ভোট গ্রহণের আগে বারবার বদলাতে পারে, কারণ বিহারে দলবদল, জোট বদল ও নির্ধারক আসনভাগ ব্যাপক রকম জটিল।

জোট/দল সম্ভাব্য আসন সংখ্যা
এনডিএ ১৩৬-১৪৫
INDIA ব্লক ৭০-৮০
অন্যান্য/স্বতন্ত্র ১৫-২০

অর্ধেকের বেশি আসন পেলে কি হবে?

  • যে জোট ১২২টি বা তার বেশি আসন পাবে, স্বভাবতই তারা সরকার গঠনের সুযোগ পাবে। এনডিএ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে মুখ্যমন্ত্রী থাকবে নীতীশ কুমার (JDU) বা BJP-র প্রভাবিত কেউ।
  • বিপরীতে, INDIA ব্লক সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে তেজস্বি যাদব প্রধান মুখ্য মন্ত্রী kandidaat হবেন, তবে ছোট দলগুলোর সমর্থন অপরিহার্য হবে।
  • মৌলিক শক্তি কার হাতে থাকবে সেটাই বিহারের উন্নয়ন, প্রশাসন ও নীতিতে দীর্ঘমেয়াদে সুর-টান নির্ধারণ করবে।

বিস্তারিত পূর্বাভাস ও সর্বশেষ সিট শেয়ার পেতে পারেন Moneycontrol-এর সাম্প্রতিক ভোট জরিপে এবং Livemint-এর বিশ্লেষণে

কেন্দ্র ও রাজ্য সম্পর্ক: বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ও বিহারের সম্পর্কের উপর ফলাফলের প্রভাব বিশ্লেষণ

বিহার ও কেন্দ্রের সম্পর্ক নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক ছকে বড় ভূমিকা রাখবে। যদি এনডিএ আবারও সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখে, তবে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে প্রশাসনিক সহযোগিতা জোড়ালো হবে। এতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জন্য তহবিল বরাদ্দ, অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা প্রকল্পগুলো দ্রুত এগোতে পারে।

বিপরীতে, যদি বিরোধী INDIA ব্লক সরকার গঠন করে, তাহলে কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক কিছুটা তিক্ত হতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় বিরোধী শাসিত রাজ্যে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ, প্রশাসনিক সামঞ্জস্য ও নীতিগত বাস্তবায়নে টানাপড়েন বাড়ে। বিশেষ করে কাস্টি সেন্সাস, কৃষি বিল, শিক্ষা সংস্কার বা রাজস্ব বণ্টনে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে।

  • কেন্দ্র-রাজ্য সহযোগিতার লাভ:
    • কেন্দ্রীয় প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ, উন্নয়ন, চাকরি, স্মার্ট সিটি, রেল ও রাস্তার মতো সেক্টরে সুবিধা।
    • রাজ্য সরকারের কার্যক্ষমতাও বাড়তে পারে; ফলে দ্রুত জনসেবায় পরিবর্তন সম্ভব।
  • বিরোধী সম্পর্ক হলে সম্ভব অসুবিধা:
    • নীতি বাস্তবায়নে গতি কমে যেতে পারে।
    • তহবিল ছাড় ও প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হতে পারে।
    • রাজনৈতিক টানাপড়েন জনগণের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

এই নীতি-প্রভাবের বাস্তব দিক বিশ্লেষণ করেছেন The Diplomat-এর বিশ্লেষণে এবং Frontline’s প্রতিবেদনে

ভবিষ্যৎ নীতি দিকনির্দেশনা: নতুন সরকার কী কী নীতি চালু করতে পারে, বিশেষ করে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে, তা পূর্বাভাস দিন

নির্বাচন-পরবর্তী সরকার কে হবে, তার ওপর নির্ভর করে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে প্রচুর নীতিগত পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। সাধারণত এনডিএ জোটের সরকার হলে:

  • কৃষি: কৃষক সম্মান রাশি, কৃষিঋণ মুকুব ও আরও উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য কৃষি ইনফ্রা প্রকল্প। শিল্পায়ন, বোরো-রবি শস্যের উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য নতুন স্কিম চালু হতে পারে।
  • শিক্ষা: স্কুল পরিকাঠামো উন্নয়ন, স্কলারশিপ, বালিকা শিক্ষায় বাড়তি ফোকাস। ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ, টিচার নিয়োগ ও কোচিং ভর্তুকি।
  • স্বাস্থ্য: নতুন সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যবিমা, ‘মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা’ স্কিম, টেলিমেডিসিন, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ।

ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP) ও জনতা দল (United)-এর প্রচারে চাকরি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য–এই তিনটিই গুরুত্ব পাচ্ছে। এবং বিগত বছরগুলোর মতো নারী ও যুবকের উন্নয়নকেও কৌশলগতভাবে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে, INDIA ব্লক/মহাগঠবন্ধন শাসনে:

  • কৃষি: কৃষক সুরক্ষা (এমএসপি), কৃষি ঋণ মওকুফ, অন্তর্ভুক্তিমূলক কৃষি নীতি। কৃষিজাত চেইনে মহল্লাভিত্তিক কারখানা।
  • শিক্ষা: সরকারি চাকরি খালি পদ পূরণ, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক ভাতা, কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি কমানো।
  • স্বাস্থ্য: সরকারি হাসপাতালের মানোন্নয়ন, চিকিৎসা খরচ কমানো, SC/ST/OBC সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্য-ভাতা বাড়ানো।

জন সুরাজ পার্টি ও নতুন ছোট দলগুলো কর্মসংস্থান, দুর্নীতিমুক্ত গভার্ন্যান্স, ও স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোগে বিশেষ প্রণোদনা দিতে পারে।

সবশেষে, বিহার সরকার যে-ই গড়ুক, চাপ থাকবে-

  • বাস্তবভিত্তিক কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন,
  • সামাজিক ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বেড়ানোর ওপর।

এই নীতিমালা ও নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নিয়ে আরও পড়তে পারেন India Today-এর বিশ্লেষণে এবং Livemint-এর রিপোর্টে

উদ্বেগ, আশা ও নতুন চ্যালেঞ্জ—সব মিলিয়েই বিহার ২০২৫-এর নির্বাচনী ফলাফল শুধু রাজ্যের নয়, গোটা দেশের রাজনৈতিক চালচিত্র বদলে দিবে।

উপসংহার

বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫ নিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে কর্মসংস্থান, কাস্টি, সামাজিক ন্যায় ও ভোটার তালিকাকে ঘিরে নানা বিতর্ক। এনডিএ, মহাগঠবন্ধন ও নতুন মুখ জন সুরাজ পার্টি সবাই তাদের কৌশল সাজিয়েছে ভোটারদের মন জয় করতে। এই নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্ব, ক্ষমতার ভারসাম্য আর ডিজিটাল প্রচার এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা।

ভোটার হিসেবে আপনার প্রতিটি ভোটই রাজ্যের ভবিষ্যৎ গড়বে। ভোটার তালিকা ঠিকঠাক আছে কিনা দেখুন আর ভোটের দিন অংশ নিন—এটাই গণতন্ত্রের বড় শক্তি।

নির্বাচনের ফল শুধু বিহার নয়, দেশের রাজনীতিতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সামনে আরও রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও আপডেট আসবে। সবাইকে ধন্যবাদ, আপনার মতামত বা আলোচনা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন—আপনি কী মনে করেন, কারা এগিয়ে যাচ্ছে?

Click here