অসমে বিপুল নগদ ও সোনা উদ্ধার: নুপুর বোরার বাড়িতে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান
Estimated reading time: 1 minutes
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!অসমে ব্যাপক আলোড়ন: নুপুর বোরার বাড়িতে ১.৭০ কোটি নগদ ও সোনার সঞ্চয় উদ্ধার
অসমের রাজ্য প্রশাসনে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান আবারো খবরের শিরোনামে। কামরূপের রাজস্ব চক্র অফিসার নুপুর বোরার বাড়িতে ভিজিল্যান্স সেলের হানা, নগদ টাকা আর সোনা উদ্ধার হওয়ার ঘটনা রাজ্যজুড়ে চাঞ্চল্য ও আলোচনার ঝড় তুলেছে। নজরদারির ছয় মাস পর এই অভিযান শুধু প্রশাসনিক স্বচ্ছতাই নয়, সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গা নিয়েও বড় প্রশ্ন তুলেছে।
https://www.youtube.com/watch?v=iVjWYdUX3VE
নুপুর বোরার বিরুদ্ধে অভিযানের কারণ ও পটভূমি
নুপুর বোরার বিরুদ্ধে সম্পত্তি-অতিরিক্ত আহরণের অভিযোগ ছিল গত ছয় মাস ধরে। তিনি কামরূপ জেলার গড়গাঁও রাজস্ব চক্রের দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ ছিল, সরকারি চাকরির পদে থেকেও তার সম্পত্তি বছরে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ভিজিল্যান্স সেল বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নুপুরের চলাফেরা, লেনদেন, সম্পত্তির হিসেব অত্যন্ত গোপনে পর্যবেক্ষণ করে।
অন্যান্য স্তরের বাৎসরিক আয় তুলনায় সম্পত্তি বৃদ্ধি ও সন্দেহজনক লেনদেন খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় অভিযান চালানো হবে। বর্তমান প্রশাসন বারবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছে। অভিযানটি ঠিক তখনই হয়, যখন তার অ্যাকাউন্টে আর বাড়িতেও অস্বাভাবিক সম্পদের ইঙ্গিত মেলে। বিস্তারিত পড়ুন গুয়াহাটি প্লাস – নুপুর বোরার বাড়িতে অভিযানের খবর।
অভিযান ও বাজেয়াপ্ত সম্পদ
ভিজিল্যান্স সেল শুক্রবার সকালে গুয়াহাটির গোটানগর, মালিগাঁও এলাকার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায়। প্রায় দশ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি। উদ্ধার হয় ১.৭০ কোটি টাকা নগদ, সোনার গয়না ও হীরার অলংকার, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারিসহ ব্যক্তিগত নথিপত্র। অভিযানের সময় নুপুর বোরাকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পুলিশ এবং প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, অভিযানে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকার স্তূপ, সোনা-হিরার গয়না, এবং বিপুল নথি দেখে তারা বিস্মিত। অসম পুলিশ ও ভিজিল্যান্স দলের কর্মকর্তারা স্পষ্টভাবে বলেন, “জবাবদিহিতার প্রতিষ্ঠা ও দৃষ্টান্ত তৈরি করতেই এই পদক্ষেপ।” নজরদারির ব্যাপারে আরও বিশদ জানতে পড়ুন News18 – অভিযানের বিস্তারিত।
সহকারী সূরজিত ডেকার বাড়িতেও অভিযান
নুপুর বোরার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগী সূরজিত ডেকাকেও অভিযানের আওতায় আনা হয়। ডেকার বাড়ি থেকে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, কিছু ক্যাশ এবং প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, এমন বহু লেনদেনের রশিদ ও চেকবই। সূরজিত ডেকা নুপুরের আর্থিক কর্মকাণ্ড ও লেনদেনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বলেই নজরদারির আওতায় আসেন।
রাজ্যে দুর্নীতি ও সরকারি নজরদারি
অসমের প্রশাসনে দুর্নীতির কালো ছায়া বহু পুরোনো। বিশেষত সংখ্যালঘু বা সংবেদনশীল এলাকায় অনিয়ম, উৎকোচ, অবৈধ সম্পত্তির ঘটনার সংখ্যা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “অসমে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, দুর্নীতিগ্রস্তদের জন্য কোনো জায়গা নেই। নজরদারি ও ভিজিল্যান্স সেল আরও জোরদার হবে।”
এ ধরনের অভিযান সরকার ও প্রশাসনের প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনে। পাশাপাশি এসবের মাধ্যমে বার্তা যায়, দুর্নীতির সঙ্গে আপস নেই। অনিয়ম রোধে এখন প্রযুক্তি ও তদন্তের পথেই ভরসা রাজ্য প্রশাসনের। আরও জানতে টাইমস অফ ইন্ডিয়া – দুর্নীতির খবর।
উপসংহার
নুপুর বোরার বাড়িতে এই অভিযান যে ইঙ্গিত দেয়, তা হলো অসম সরকার দুর্নীতি বিরোধী অবস্থানে আপসহীন। সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে এ ধরনের পদক্ষেপ দরকার ছিল। বাজেয়াপ্ত কোটি কোটি টাকার সম্পদ, কার চাপে, কার শিথিলতায় জমেছে, এখন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এমন অভিযান প্রয়োজন, উৎসাহের সঙ্গেই রাজ্যবাসী এসব দৃষ্টান্ত গড়ার অপেক্ষায়। পাঠকের প্রশ্ন, ভবিষ্যতে দ্বায়িত্বপ্রাপ্তরা দায়িত্ব পালন করবেন তো? সময়ই এর উত্তর দেবে।
আপনার মতামত বা অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!
