ধুবড়ি জেল মাদক চোরাচালান তদন্ত: এফআইআর, আদালতের অগ্রগতি ও ২০২৫ আপডেট

Estimated reading time: 1 minutes

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ধুবড়ি জেলের ভিতরে মাদক চোরাচালান: সরকারি কৌঁসুলির এফআইআর ও তদন্তের অগ্রগতি (২০২৫)

ধুবড়ি জেলা কারাগারের ভিতরে মাদকের অবাধ চোরাচালান সংক্রান্ত সাম্প্রতিক অভিযোগ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা অঞ্চলে। সরকারি কৌঁসুলি দিনেশ চৌধুরী একজন হিসেবে ফৌজদারি মামলা (এফআইআর) দায়ের করেছেন, যেখানে তিনি আদালতের কার্যকালীন আলোচনায় তিনজন বন্দির দেওয়া সাক্ষ্য তুলে ধরেন। অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, জেলের ভেতরে নিয়মিতভাবে মাদক ঢুকছে আর ব্যবহার হচ্ছে, এমনকী আকস্মিক তল্লাশিতেও গাঁজা ও নিষিদ্ধ ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কারা-কর্তারা সম্পৃক্ত কিনা, সেই প্রশ্নও উঠে এসেছে বন্দিদের অভিযোগে―এই বিষয়টিকে আরও গুরুতর করে তুলেছে। এফআইআর ও আদালতের মন্তব্যে স্পষ্ট যে, শুধুমাত্র জেলের অভ্যন্তরেই নয়, গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ওপরও এখন চোখ দিচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই ব্লগে সেই অন্ধকার চক্র, তদন্তের অগ্রগতি এবং কারাগারের নিরাপত্তা বাস্তবতা নিয়ে সরাসরি তথ্য ও আলোচনা থাকবে।

YouTube লিংক: Dhubri jail drug trade

ঘটনার বিবরণ ও এফআইআর-এর পটভূমি

ধুবড়ি জেলা কারাগারে মাদক চোরাচালানের অভিযোগটি সামনে আসার পর পুরো জেলা স্তব্ধ হয়ে যায়। কারা-কর্তৃপক্ষ, বিচার বিভাগ, এবং সাধারণ নাগরিকদের কৌতূহল—সব একসঙ্গে মিলেছে এই মামলায়। সাংবাদিকদের পাশাপাশি এলাকার মানুষও জানতে মরিয়া, কীভাবে জেলের ভেতরে এই ধরনের মাদকের কারবার দিনের পর দিন চলে এল। অভিযোগের প্রাথমিক তথ্য যেভাবে আলোচনায় আসে, ঠিক সেভাবেই সরকারি কৌঁসুলির পক্ষ থেকে নেওয়া পদক্ষেপে দ্রুততা দেখা যায়।

কাদের মাধ্যমে অভিযোগ সামনে আসে

এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ কোনো সাধারণ সূত্র থেকে নয়, আদালতের কার্যক্রম চলাকালে কারাবন্দিদের সরাসরি বক্তব্যের মাধ্যমেই প্রকাশ্যে আসে। বিশেষ মামলা নম্বর ৩৩৭/২০২৩-এর শুনানিকালীন তিনজন বন্দি—রাজিব সরকার, হাসমত আলী এবং সুনীল বর্মন—বিচারকের সামনে শপথ নিয়ে জেলের ভেতরে অবৈধ মাদকের প্রবাহ নিয়ে বিস্তৃত তথ্য দেন। তাদের ভাষ্যে উঠে আসে, জেলে মদ, গাঁজা, ইয়াবার মতো পণ্য ঢুকে পড়ছে বারবার।

আদালতে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও অপরাধীদের তালিকা

কারা-কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে এই তিন আসামির সরাসরি অভিযোগ শুনে আদালত হতবাক হয়। সরকারি কৌঁসুলি দীনেশ চৌধুরী তাৎক্ষণিক আদালতকে জানান, কেবল বন্দিদের মুখের অভিযোগ নয়, সাম্প্রতিক তল্লাশিতেও বড় অঙ্কের গাঁজা ও নিষিদ্ধ ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে।

তাদের বক্তব্য সংক্ষেপে:

  • রাজিব সরকার (৩৬), গ্রেপ্তার: NDPS আইনের আওতায়
  • হাসমত আলী (৩০), বারবার অভিযোগে নাম আসে
  • সুনীল বর্মন, স্থানীয় সূত্রে পরিচিত

এই তথ্যগুলো এফআইআর দাখিলের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাদের নাম ও অভিযোগের বিবরণ বিচারক ও সরকারি আইনজীবীর দৃষ্টিতে মামলাটিকে আরও জরুরি করে তোলে।

সরকারী কৌঁসুলির দায়েরকৃত এফআইআর-এর গুরুত্ব

সরকারি কৌঁসুলি দিনেশ চৌধুরী গত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তারিখে সংশ্লিষ্ট থানায় এফআইআর দাখিল করেন। The Assam Tribune-এর প্রতিবেদনে উঠে আসে, এই এফআইআর শুধু অভিযোগের বর্ণনা নয়, বরং ধুবড়ি জেলের প্রশাসনিক দুর্বলতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর ও দুর্নীতির জটিল চিত্র প্রকাশ করে। এফআইআরের বিষয়বস্তু প্রশাসনের প্রতি চাপ বাড়ায় এবং তদন্ত ত্বরান্বিত করার আভাস দেয়।

মামলার তথ্য টেবিল

মামলা নং আসামির নাম বক্তব্য উদ্ধারকৃত দ্রব্য
৩৩৭/২০২৩ রাজিব সরকার প্রায়শই মাদক প্রবেশ গাঁজা, ট্যাবলেট
৩৩৭/২০২৩ হাসমত আলী জেলে মাদকের অবাধ ব্যবহার মদ, গাঁজা
৩৩৭/২০২৩ সুনীল বর্মন জেলকর্মীদের সংশ্লিষ্টতার ইঙ্গিত নিষিদ্ধ ট্যাবলেট

এই মামলার প্রতিটি ধাপ, এফআইআরের দাখিল ও আদালতের পর্যবেক্ষণ, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আর নিরাপত্তার প্রশ্নকে সামনে এনেছে। এখন গোটা জেলা তাকিয়ে আছে তদন্তের পরবর্তী দিকে।

আরও বিস্তারিত জানতে দেখুন India Today NE-র রিপোর্ট

জেলের ভিতরে মাদক প্রবাহ: অভিযোগ ও প্রমাণ

ধুবড়ি জেলের করিডরে পুলিশ ও বন্দির টানটান জিজ্ঞাসাবাদ, পেছনে সন্দেহজনক প্যাকেট
Image created with AI

ধুবড়ি জেলা জেলে মাদক চোরাচালান নিয়ে যা ঘটছে, তাতে অনেকে বাকরুদ্ধ। বন্দিরা নিজেরাই আদালতের সামনে মুখ খুলে বলেন, কারাগারের নিরাপত্তার আড়ালে কীভাবে মাদক (গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট) ঢুকে পড়ে, তা অবাক করার মতো। গোপন তল্লাশিতে একাধিকবার মাদকদ্রব্য উদ্ধার হলেও অনেক সময় বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায় পুলিশের নির্লিপ্ততায়। পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য আবদুল রউফ ও নুরুলের নাম উঠে এসে প্রশাসনিক জবাবদিহি নিয়েও নানা প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। উদ্ধার হওয়া মাদক ও আকস্মিক তল্লাশির ঘটনার পরও, প্রশাসনিক উদাসীনতা অনেককেই হতাশ করেছে।

জেল আধিকারিকদের উপর সরাসরি অভিযোগ

বন্দি ও কিছু জেল–ভুক্ত সাক্ষীর বক্তব্যে জেল কর্মীদের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ উঠে এসেছে। তারা জানান, মাদক শুধুমাত্র বাইরের জগৎ থেকেই ঢুকে যাচ্ছে না, বরং ভিতরের কিছু কর্মচারীর সাহায্য ছাড়াও এত সহজে এগুলো পৌঁছানো অসম্ভব। কারা কর্মকর্তার শিথিলতা ও সম্পৃক্ততার এই অভিযোগ শুধু কারাগারের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেনি, প্রশাসনিক সংস্কৃতিতে লুকিয়ে থাকা দুর্নীতির নতুন চিহ্নও দেখিয়ে দিয়েছে।

  • কীভাবে অভিযোগ উঠে আসে?
    • একাধিক বন্দির বক্তব্যে জানা যায়, জেলের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু পথ এবং নির্দিষ্ট সময়ে জেল কর্মচারীর উপস্থিতি কিংবা অনুপস্থিতি কাজে লাগিয়ে মাদক প্রবেশ করে।
    • আদালতের সাক্ষ্যে ‘নাম ধরে’ কয়েকজন কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনেন বন্দিরা।
    • সরকারি কৌঁসুলি দিনেশ চৌধুরীর দায়েরকৃত FIR-এ বিশদভাবে এই তথ্যগুলো উঠে এসেছে।
  • প্রশাসনিক দুর্বলতা ও দুর্নীতি কেন ইঙ্গিতপূর্ণ?
    • তল্লাশি চালিয়ে যে পরিমাণ গাঁজা, ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে, সেটি পুরো ঘটনাকেই আরও স্পষ্ট করে তোলে—জেলের ভিতরে সক্রিয়ভাবে কেউ না কেউ সুবিধা করে দিচ্ছে।
    • পুলিশ সদস্য আবদুল রউফ ও নুরুলের নাম উল্লিখিত হয়েছে অভিযোগে, কিন্তু তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসন গড়িমসি করছে। এতে বাইরের সমাজে বার্তা ছড়িয়েছে, জবাবদিহি অনেকাংশেই অনুপস্থিত।
    • অনেক সময় ঘটনায় যুক্ত ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রভাবশালী বা দুর্নীতিগ্রস্ত নার্সিং অফিসারদের সম্পৃক্ততার সন্দেহ প্রকাশ করেছেন, যেটা তদন্তকে নতুন দিক দিয়েছে।

দৃষ্টি আকর্ষণের বিষয়

  • উদ্ধার হওয়া মাদকে শুধু বন্দিই জড়িত নন; পুলিশের নির্দিষ্ট কর্মকর্তা এবং জেলের প্রশাসনিক ঘাটতি ক্রমেই স্পষ্ট।
  • তদন্ত বা শুনানির সময় যাঁরা সাক্ষ্য দেন, তাঁরাও পুলিশের কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, এতে জেল প্রশাসনের ওপর মানুষের আস্থা আরও কমে যাচ্ছে।

অভিযোগের এতো পরিষ্কার ভিত্তি থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের শিথিল ভঙ্গি মারাত্মক প্রশ্ন উত্থাপন করছে। সমাজের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জেল হল শেষ আশ্রয়—সেখানে যদি এই সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে বৃহত্তর নিরাপত্তা বাঁচানো বড় চ্যালেঞ্জ।

আরও বিশদ জানতে পড়ুন The Assam Tribune-এর প্রতিবেদন প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণের জন্য।

আইনি প্রতিক্রিয়া ও সম্ভাব্য অনুসন্ধান

ধুবড়ি জেলা জেলে মাদক চোরাচালানের অভিযোগ সামনে আসার পর প্রশাসনে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। সরকারি কৌঁসুলির এফআইআর, আদালতের পর্যবেক্ষণ ও বন্দিদের প্রকাশ্য সাক্ষ্য পুরো ঘটনাকে আইনি ও তদন্তের ক্ষেত্রে গুরত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ভিতরে সক্রিয় মাদক সিন্ডিকেট ও জেল-কর্মীদের সম্ভাব্য জড়িত থাকার ইঙ্গিত উচ্চপর্যায়ের অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা সামনে এনে দিয়েছে। এই পর্যায়ে পুলিশ, বিচার বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

পুলিশের পরবর্তী করণীয় ও তদন্তের ধাপ

এফআইআর দায়েরের পর, পুলিশের উপর একাধিক স্পষ্ট দায়িত্ব এসে পড়েছে। বাস্তবে, তদন্তের গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য নির্ভরযোগ্য মাধ্যম, ফরেনসিক পরীক্ষা ও সাক্ষ্যগ্রহণ জরুরি। সাধারণত, এ ধরনের ঘটনায় পুলিশের পদক্ষেপ তিনটি স্তরে ভাগ করা যায়:

  • মৌলিক অনুসন্ধান: বন্দি, জেল-কর্মী ও সংশ্লিষ্ট কারা প্রশাসনের বয়ান নেওয়া, ঘটনাস্থলে আবার তল্লাশি.
  • ডিজিটাল ও ফরেনসিক তথ্য সংগ্রহ: সিসিটিভি ফুটেজ, কল রেকর্ড, আর্থিক লেনদেনের ট্র্যাকিং.
  • প্রত্যক্ষ অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের শনাক্তকরণ: সন্দেহভাজন কর্মচারী, বাইরের ডিলার বা পুলিশের অন্দরের কেউ জড়িত কি না তা স্পষ্ট করা.

মূলত, পুলিশকে নিরপেক্ষ থেকে আইনের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে যাতে মামলা ‘ছাড়’ না পায় বা চাপের বাইরে চলে না যায়। এই খাতে স্থানীয় ও উর্ধ্বতন প্রশাসনের সমন্বয় যে দরকার, তা স্পষ্ট বোঝা যায় Assam Tribune-এর রিপোর্ট থেকে।

সম্ভাব্য উচ্চপর্যায়ের অনুসন্ধান ও বিচার বিভাগীয় দিক

ওপেন কোর্টে বন্দিদের জবানবন্দি এবং অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলির জোরালো পদক্ষেপ, বিচার বিভাগকে দ্রুত উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মূলত, এই ধরনের অভিযুক্ত সিন্ডিকেট ধ্বংস করতে হলে শুধু টানাটানি নয়, স্পেশাল টাস্ক ফোর্স, দুর্নীতি দমন শাখা ও NDPS-এর মতো বিশেষ সংস্থার ভূমিকা দরকার হতে পারে।

প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে, আদালত চাইলেই নির্দিষ্ট ধারা প্রয়োগ করে:

  • NDPS Act, 1985: মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে কঠোর মামলা
  • IPC 120B বা 420: চক্রান্ত, প্রতারণা ও দুর্নীতির অভিযোগ
  • Prevention of Corruption Act: দুর্নীতিতে সরকারি কর্মচারীদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে

এভাবে, ধারাগুলি মিশিয়ে প্রশাসনিক এবং বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়।

নিরপেক্ষতা ও তদন্তের স্বচ্ছতা

আইনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষত যখন প্রশাসনিক কর্মচারীরা নিজেই অভিযুক্ত। পুলিশ তদন্তে গতি আনতে পারে, কিন্তু সত্যিই ফল আসবে নিরপেক্ষ যাচাই, প্রত্যক্ষ প্রমাণ এবং স্বাক্ষীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে। বিচার বিভাগও এই বিষয়ে এখন নজরদারি ও নিয়মিত মনিটরিং বাড়াতে উৎসাহী হয়ে উঠেছে।

পাঠকরা সবসময় জানতে চান—এই তদন্ত কি সত্যিই স্বচ্ছ হবে? তদন্তে কোনো পক্ষপাত থাকলে খুব সহজেই গোটা প্রক্রিয়া বৃথা হয়ে যাবে। এ জন্য সকল পর্যায়ে মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট আপডেট পেতে India Today NE-এর রিপোর্ট দেখতে পারেন।

সংশ্লিষ্ট আইন ও মামলার ধরন: সংক্ষেপ বিশ্লেষণ

ধুবড়ি জেলে যা ঘটেছে, তাতে বেশ কয়েকটি আইনগত ধারা একসঙ্গে ব্যবহৃত হতে পারে:

আইন/ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্র শাস্তি/ফলাফল
NDPS Act মাদক চোরাচালান, রাখার অভিযোগ কড়া জেল, আর্থিক জরিমানা
IPC 120B/420 চক্রান্ত, প্রতারণা কারাদণ্ড, জরিমানা
Corruption Act সরকারী কর্মীর দূর্ণীতি বরখাস্ত, মামলার মুখোমুখি

এ ধরনের আইনি ব্যবস্থা শুধু সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার বা বিচারেই আটকে থাকে না, বরং জেলের বাইরেও বৃহত্তর প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও সতর্কতার বার্তা দেয়।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বিচার করে প্রশাসন কেবল সাধারণ তদন্তেই থেমে থাকবে না—বিচার বিভাগের চাপে উচ্চপর্যায়ে নিরপেক্ষ চূড়ান্ত অনুসন্ধান দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এতে শুধু ধুবড়ি জেলা নয়, গোটা রাজ্যের প্রশাসনিক বদল আশা করা যায়।

ঘটনার প্রভাব ও বিদ্যমান প্রশ্নসমূহ

ধুবড়ি জেলে মাদক চোরাচালানের সন্দেহজনক পর্দা ওঠার পর এলাকার জনজীবন, আইনি প্রশাসন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা এক নতুন চাপের মুখে পড়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ, আইনজ্ঞ আর সামাজিক নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন—একটা কারাগারে এত কড়া নিরাপত্তার মধ্যেও যদি মাদক অবাধে চলাচল করে, তবে দেশের বাকি নিরাপত্তা আর বিচারব্যবস্থার কী অবস্থা? ঘটনাটি শুধু জেলের ভিতরে সীমাবদ্ধ নেই; এটা পুরো জেলার আইনশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে চিন্তার কারণ হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও জনগণের উদ্বেগ

ঘটনার পর এলাকার মানুষ ভীত, রাগান্বিত এবং বিভ্রান্ত। কারাগারে নিয়মিত মাদক প্রবেশের অভিযোগ থেকে স্পষ্ট—জেল, যা শেষ আশ্রয় হিসেবে বিবেচিত, সেটাও নিরাপদ নয়। এইবার, শুধু বন্দিদের হাতে অপরাধ নয়, বরং কারা-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধে সহযোগিতার ইঙ্গিত মিলেছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর বড় আকারের আস্থা-সংকট তৈরি হয়েছে।

  • জনমনে যেসব প্রশ্ন ঘুরছে:
    • প্রশাসনিক ফাঁক কোথায়? কীভাবে জেলের মধ্যে এতো মাদক ঢুকে গেল?
    • অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কখন কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
    • তদন্তে সত্যিই কি নিরপেক্ষতা থাকবে?

আইনশৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ:
আসামের জেল-ব্যবস্থা কতটা দুর্বল যে, বাইরের সিন্ডিকেটের পাশাপাশি ভিতরের লোকজনও নেটওয়ার্ক চালাতে পারে? কর্তৃপক্ষ শীর্ণ অথবা দুর্নীতিগ্রস্ত হলেই নিরাপত্তা ছিদ্র হয়; এতে গোটা অধ্যবসায় বিফলে যায়। Assam Tribune-এর প্রতিবেদনে প্রকাশ পায়, এফআইআরের তদন্ত উচ্চপর্যায়ে গিয়েছে—তবু স্থানীয় সমাজে অবিশ্বাস কমছে না।

সংস্কারের অভাব আর অপরাধ বৃদ্ধির কারণ

সংস্কার না হলে কারাগার ‘শাস্তির ঘর’ থেকে অপরাধের নতুন পাঠশালায় পরিণত হয়। ধুবড়ি জেলা জেলে দীর্ঘদিনের ব্যবস্থাপনা ঘাটতি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি আর নিরুত্তাপ মনোভাব অপরাধীদের জন্য সহজ রাস্তা তৈরি করেছে। এখানে দিনকে দিন অপরাধের মাত্রা শুধু বাড়ছেই।

  • নিয়মিত কর্মী বদলি না হওয়া
  • আধুনিক নজরদারি ব্যবস্থার অভাব
  • বন্দিদের সঙ্গে কর্মীদের অঙ্কশায়িনতা
  • নজরদারির নামে লোক দেখানো অভিযান

এসব কিছুর ফলেই অপরাধ কোনোভাবেই কমছে না। বরং, জেলই হয়ে উঠেছে মাদক সিন্ডিকেটের ‘ট্রানজিট রুম’।

দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক প্রভাব

কারাগারের অভ্যন্তরে অপরাধ প্রসারিত হলে, বাইরের সমাজেও তার ছায়া পড়ে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা কমে যায়, মাদকাসক্তির হার বাড়ে, আর পরিবারগুলোর ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, জেল রক্ষিত বন্দিরা বাইরে সম্প্রদায়ের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রেখে আরও বড় চক্র চালাতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি:

  • নতুন অপরাধীর জন্ম ও চক্রের সম্প্রসারণ
  • পুলিশের প্রতি সমাজের আস্থা কমে আসা
  • প্রশাসনিক যথার্থতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন

বিদ্যমান প্রশ্ন ও অনুসন্ধানের দাবী

এখন আসল প্রশ্ন—এই ঘটনা কি প্রশাসনিক সংস্কারের সূচনা করবে, নাকি আবারও কিছুদিন পর মানুষের মনোযোগ কমে গেলে ঘটনাটি ভুলে যাবে সবাই? পুলিশের অভ্যন্তরে এবং বিচার বিভাগের কার্যপ্রণালিতে মূলবান পরিবর্তন না হলে, অপরাধের এমন “গোপন কারখানা” আরও বহু জায়গায় দেখা যাবে।

আরও বিশদ এবং তুলনামূলক রিপোর্টের জন্য পড়ুন Assam Tribune-এর মূল প্রতিবেদনIndia Today NE-র নিউজ

উপসংহার

ধুবড়ি জেলে মাদক চক্র নিয়ে সাম্প্রতিক তথ্য আসামের নিরাপত্তা ও বিচারব্যবস্থার গভীর দুর্বলতাই প্রকাশ করেছে। অভিযোগ উঠে এসেছে, আদালতের সাক্ষ্য থেকে শুরু করে ফৌজদারি মামলা পর্যন্ত—কেউই নিরাপদ না, সবাই সন্দেহের মুখে। কেবল জেলের ভেতরের নয়, বাইরে থেকে ঘুরে ঘুরে মাদক প্রবাহিত হচ্ছে, আর কিছু কর্মচারীর গা-ছাড়া গানেই অপরাধীরা বারবার সুবিধা নিচ্ছে।

দোষীদের দ্রুত শাস্তি, পুরো নেটওয়ার্ক ভাঙার পদক্ষেপ এবং প্রশাসনে স্বচ্ছতা আনা জরুরি। মাদকের এ ব্যবসা থামাতে হবে চিরতরে, না হলে ভবিষ্যতে আরও খারাপ খবর আসা সময়ের ব্যাপার। আধুনিক প্রযুক্তি, নিয়মিত ও হঠাৎ তল্লাশি, সিসিটিভি নজরদারি ও কর্মীদের ঘন ঘন বদলির মতো ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে।

সবশেষে, এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে প্রশাসনিক সংস্কার এবং জবাবদিহি বাড়ানো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। গল্পটি এখানেই শেষ নয়—সচেতন পাঠক হিসেবে আপনার মতামত, অভিজ্ঞতা বা প্রস্তাব মন্তব্যে লিখে সমাজ-প্রশাসনকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিন, বদল তখনই সম্ভব। পাঠে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Click here