২০২৫ সালের গ্রামীণ অর্থনীতি: MGNREGS-এ কাজের চাহিদা ২৫% কমার আসল কারণ কী?

Estimated reading time: 1 minutes

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

MGNREGS‑এ অগাস্ট ২০২৫‑এর কাজের চাহিদা ২৫% কমের পেছনের কারণ ও গ্রামীণ অর্থনীতির দৃশ্যপট

মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কিম (MGNREGS) গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম প্রধান নিরাপত্তা নেট। ২০০৫ থেকে চলা এই প্রকল্পটি বিশেষ করে অর্থনৈতিক ঝড়ে প্রবল প্রভাব ফেলে শ্রমের বাজারে। কিন্তু ২০২৫ সালের অগাস্ট মাসে কাজের চাহিদা এক বছরে ২৫% এর বেশি কমে গেছে, যা গ্রামীণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক গতিবিধির একটি নতুন দিক নির্দেশ করছে।

এই হ্রাস মূলত বৃষ্টিপাতে সমৃদ্ধ কৃষিক্ষেত্রের কাজে মানুষের বেশি নিয়োজিত হওয়ার কারণে, যেটা আগের বছরের তুলনায় খড়িফ শস্য বপনে বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি, সরকারি খরচের সীমাবদ্ধতাও এতে ভূমিকা রেখেছে। এর ফলে, গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবস্থা এখন বেশ শক্তিশালী দেখা যাচ্ছে; শ্রমিকেরা বেশি করে কৃষি ও প্রাইভেট খাতে কাজ পাচ্ছেন।

এখানে আমরা জানবো কীভাবে কৃষি বৃদ্ধি, বাজেট নিয়ন্ত্রণ আর মৌসুমী পরিবর্তন মিলেমিশে MGNREGS-এ কাজের চাহিদাকে প্রভাবিত করেছে এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থানের পরম্পরাগত চিত্র কেমন পরিবর্তন হচ্ছে। এই তথ্য গ্রামীণ অর্থনীতির দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটা আগামী কর্মসংস্থান ও নীতি নির্ধারণে হাত ধরবে।

ইতিমধ্যে একটা তুলে ধরা ভিডিও এখানে, যেখানে এই বিষয়ের সংবাদ এবং বিশ্লেষণ পাওয়া যাবে: MGNREGA Work Demand Falls for 12th Straight Month Amid Stronger Rural Economy

কাজের চাহিদা হ্রাসের পটভূমি

মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টি স্কিমের (MGNREGS) কাজের চাহিদা ২০২৫ সালের অগাস্ট মাসে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশের বেশি কমে গেছে। এটি একটি বড় সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিবর্তন যা গ্রামীণ কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির বিভিন্ন দিককে স্পষ্ট করে তুলে ধরছে। চলুন, ভিন্ন ভিন্ন দিক থেকে এই হ্রাসের কারণ ও প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করি।

পরিসংখ্যানের মূল তথ্য: ১৪.১৯ মিলিয়ন ব্যক্তি, ১১.৮৮ মিলিয়ন ঘর, এবং গত বছর ১৮.৯৮ মিলিয়ন ব্যক্তির তুলনা

২০২৫ সালের অগাস্টে MGNREGS-এ কাজের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা প্রায় ১৪.১৯ মিলিয়ন হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের ১৮.৯৮ মিলিয়নের তুলনায় প্রায় ২৫% কম। একইসাথে, কাজ চাওয়া ঘরসংখ্যানও ১১.৮৮ মিলিয়নে নেমে এসেছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬% কম।

এই কমতি কেবল সংখ্যাতাত্ত্বিকই নয়, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটেও গভীর প্রভাব ফেলে। কাজের জন্য আবেদনকারী পরিবার ও ব্যক্তির হ্রাস মানে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ উৎস থেকে কর্মসংস্থানের সুযোগ বেড়েছে বা কৃষি ও অন্যান্য সেক্টরে মানুষদের কাজ লেগেছে। এই পরিবর্তনের ফলে MGNREGS-এর প্রতি নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা কমছে।

অগাস্টে কাজের অনুরোধে ২৫% কমতি: বছরের তুলনায় এক চতুর্থাংশ হ্রাসের অর্থ

অগাস্ট ২০২৫ এ কাজের চাহিদা ২৫% কমে যাওয়া মানে আগের বছরের তুলনায় এক চতুর্থাংশ লোক শ্রমের জন্য MGNREGS-এ আবেদন করেননি। এটি একটি বড় পরিমাণ সমন্বয়, যা শুধু মৌসুমি পার্থক্য নয়, বরং কর্মসংস্থানের প্রকৃত পরিবর্তন নির্দেশ করে।

তুলনায়, জুলাই মাসে অনুরোধের পরিমাণে ছিল মাত্র ১১.৫% হ্রাস। অর্থাৎ, জলের হ্রাস বা মৌসুমী পরিবর্তনের প্রভাব জুলাইয়ে অপেক্ষাকৃত কম স্পষ্ট ছিল, কিন্তু অগাস্টে এটি দ্রুত ও বড় আকারে বেড়েছে। এই পার্থক্য দেখাচ্ছে কর্মদক্ষতার ও অর্থনৈতিক বিকল্পের বৃদ্ধি, যাতে গ্রামীন শ্রম বাজারে সরাসরি প্রভাব পড়েছে।

কৃষি মৌসুমের প্রভাব: বৃষ্টিপাতের প্রাচুর্য ও কৃষি কর্মের মৌসুমী চাহিদা

গ্রামীণ অর্থনীতির বেশিাংশই কৃষিভিত্তিক। খরিফ মৌসুমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়লে কৃষি কাজের চাহিদাও বেড়ে যায়। ২০২৫ সালের অগাস্টে বৃষ্টিপাত ভালো হওয়ায় খরিফ শস্যের বপনে বেশি মানুষের অবদান বেড়েছে। এই কারণে MGNREGS-এর প্রকল্পের জন্য অবিলম্বে শ্রমের চাহিদা কমে গিয়েছে।

অনেক শ্রমিক খরিফ চাষের কাজে মনোযোগ দেওয়ায় অবসর সময়ে MGNREGS-এ আবেদন করার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মৌসুমী শ্রমের পরিবর্তন এখানে বড় ভূমিকা পালন করেছে, যেখানে খরিফ ফসলের কাজে মানুষের নিয়োগ বর্ধিত হয়েছে, ফলে সরকারি কর্মসংস্থান প্রকল্পের ওপর নির্ভরতা কমেছে।

এভাবে, কৃষির মৌসুমী বৈশিষ্ট্য এবং প্রাকৃতিক বৃষ্টিপাতের মাত্রা মিলিত হয়ে MGNREGS-এ কাজের চাহিদার বড় পতন ঘটিয়েছে।


এমন পটভূমির জন্য বিস্তারিত বিশ্লেষণ পড়ুন এখানে, যা ২০২৫ সালের অগাস্ট মাসের কাজের চাহিদা ও গ্রামীণ অর্থনীতির গভীর প্রভাবগুলো বুঝতে সাহায্য করবে।

মজবুত গ্রামীণ অর্থনীতির সংকেত

গ্রামীণ অর্থনীতির গতি বদলানোর সময়ে আমরা দেখতে পাচ্ছি শুধু কৃষিক্ষেত্র নয়, শিল্প ও সেবা খাতেরও অবস্থা শক্তিশালী হচ্ছে। মৌসুমী কৃষি কাজ ঘিরে শ্রমিকদের নির্ভরতা কমছে, অন্যদিকে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। চলুন দেখি কীভাবে এই পরিবর্তন গ্রামীণ জীবনের চিত্র বদলাচ্ছে।

শিল্প ও সেবা খাতের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি

গত কয়েক বছরে শিল্প, নির্মাণ ও সেবা খাতে নতুন কর্মসংস্থানের অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলো বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা উন্নত দক্ষতাসম্পন্ন কাজের বাজার তৈরি করছে। বিশেষ করে নির্মাণ কাজ যেমন সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ, বাড়ি নির্মাণ, এই খাতে বেশ ভালো ধান্দা চলছে। সেবা খাতেও যেমন হেলথ কেয়ার, রিটেল, লজিস্টিক্স ও এডুকেশনে চাকরির সুযোগ বেশি।

এই খাতে কাজগুলো প্রায়ই কৃষিকাজের তুলনায় বেশি বেতন দেয়। এর ফলে অনেক শ্রমিক নতুন ধরনের চাকরির দিকে ঝুঁকছে। যেমন:

  • নির্মাণ খাতে দিনমজুরি কম্পনির চেয়েও বেশি।
  • গ্রামীণ ব্যবসায়িক সেবা খাতে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি পাচ্ছে।
  • বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ বেড়েছে।

এই প্রবণতা বোঝায় যে গ্রামীণ অর্থনীতি পরির্বতিত হচ্ছে, শ্রমিকদের আর্থিক শক্তি বাড়ছে।

বৃষ্টিপাতের পর্যাপ্ততা এবং কৃষি কাজের স্বাভাবিকতা

কৃষিতে কাজের চাহিদার হ্রাস মূলত বৃষ্টিপাতের স্থিতিশীলতার কারণে। ২০২৫ সালের বৃষ্টিপাত পূর্ববর্তী কয়েক বছরের গড়ের তুলনায় পর্যাপ্ত ও সমান ছিল। ঠিকঠাক বৃষ্টি হওয়ায় খড়িফ মৌসুমে চাষের কাজ বাড়ছে। অনেক কৃষক মাঠে ফিরে গেছেন, যার ফলে শ্রমিকদেরও সরাসরি কৃষিতে নিয়োজিত থাকার প্রবণতা বেড়েছে।

এটা পরিষ্কার যে বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিকতা শ্রম বাজারে সরাসরি প্রভাব ফেলে। যখন বৃষ্টি ঠেকায় না, তখন কৃষিকাজ স্বাভাবিক থাকে, শ্রমিকরা মাঠে ফিরে যায়, আর সরকারি কর্মসংস্থানের প্রকল্পগুলোর ওপর থেকে নির্ভরতা কমে।

বছরের পর বছর ব্যাপক বৃষ্টি নাও হওয়ার ফলে MGNREGS-এ কাজের চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন বৃষ্টিপাত ঠিক থাকায়, কাজের স্বাভাবিক চাইন হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে এই প্রকল্পে কাজের চাহিদা কমেছে।

এই প্রাকৃতিক পরিবর্তন গ্রামীণ অর্থনীতির সঞ্জীবন হিসেবে কাজ করছে, যা কৃষি শ্রমিকদের মাঠে ফিরিয়ে আনছে এবং এর মাধ্যমে গ্রামীণ জীবনের চিত্র অনেকটাই স্বাভাবিক ও প্রাণবন্ত হচ্ছে।

এই উন্নয়নশীল পরিস্থিতি নিয়ে ভিন্ন দৃষ্টিতে পড়তে পারেন এই প্রতিবেদনে, যা ২০২৫ সালের কাজের চাহিদার পতন ও গ্রামীণ চাকরির বাজারের শক্তিশালী অবস্থান তুলে ধরেছে।

MGNREGS‑এর চলমান গুরুত্ব

MGNREGS একটি সামাজিক নিরাপত্তা জালের মতো কাজ করে, যা বিশেষ করে কম শিল্পায়িত বা অনুন্নত রাজ্যগুলোর মানুষের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদিও কাজের চাহিদায় সাম্প্রতিক হ্রাস দেখা যাচ্ছে, তবুও এই প্রকল্পের গুরুত্ব এবং প্রভাব কমে যায়নি। এটি শুধু কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয় না, পাশাপাশি গ্রামীণ জনজীবনে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে। বিশেষ করে কৃষি কাজের মৌসুমের বাইরে বা অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময়, এই স্কিম শ্রমিকদের সান্নিধ্য দিয়ে তাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলে।

MGNREGS‑এর প্রকৃত মূল্য বোঝার জন্য অননুকূল রাজ্যে এর প্রভাব এবং বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে বিচার করা প্রয়োজন।

অননুকূল রাজ্যে কর্মসংস্থান সমর্থন: ওড়িশা, ছত্তিশগড়, কেরালা মত কম শিল্পায়িত রাজ্যে স্কিমের প্রয়োজনীয়তা ও প্রভাব বর্ণনা করুন

ওড়িশা, ছত্তিশগড়, ও কেরালা—এই তিনটি রাজ্যের ভূগোল এবং অর্থনৈতিক কাঠামো বিভিন্ন হলেও MGNREGS এদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই রাজ্যগুলোতে শিল্পায়নের হার কম থাকায় কৃষি ও গ্রামীণ কর্মক্ষেত্রে শ্রমের সুযোগ সীমিত। MGNREGS–এর মাধ্যমে চলে আসা অর্থ ও কর্মসংস্থান নারীর ক্ষমতায়ন থেকে শুরু করে দুর্বল সম্প্রদায়ের জীবনে আশার আলো জ্বালায়।

এই রাজ্যগুলোতে MGNREGS শুধু একটি কর্মসংস্থান প্রকল্প নয়, বরং দারিদ্র্য কমানোর ও আয়ের উৎস। বিশেষ করে ওড়িশা ও ছত্তিশগড়ের অনেক অংশে উপজাতি জনসংখ্যা বেশি, যেখানে কর্মস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন। MGNREGS তাদেরকে পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ দেয়, যাতে প্রতিবন্ধকতার মুখেও তারা আর্থিক স্বাবলম্বী হতে পারে।

কেরালা যদিও সামগ্রিক দিক থেকে উন্নত রাজ্য, তবুও এসব অঞ্চলে কিছু গ্রামীণ সম্প্রদায় এখনও স্বল্প আয়ের মুখোমুখি। সেক্ষেত্রে MGNREGS তাদের জন্য একটি সুরক্ষামূলক বেষ্টনী হিসেবে কাজ করে থাকে। কেরালাতে স্কিমের ভালো বাস্তবায়ন ও অধিক তহবিল বরাদ্দের ফলে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় এখানে MGNREGS-এর ভূমিকা তুলনামূলক বেশি জরুরি হিসেবে দেখা যায়।

এই রাজ্যগুলোর কিছু মূল প্রভাব হলো:

  • দারিদ্র্য হ্রাস ও খাদ্য সুরক্ষা বৃদ্ধি।
  • নারী ও সংখ্যালঘুদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত।
  • গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা।

এখানে কাজের সুযোগ কম থাকলেও MGNREGS গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আয়ের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে স্বীকৃত।

বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি ও মজুরি হারের চ্যালেঞ্জ: মজুরি হারের মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তুলনা, স্কিমের তহবিলের বর্তমান স্তর ও সম্ভাব্য সমন্বয়ের প্রয়োজন উল্লেখ করুন

বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এ সময়ে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক, কারণ জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে। কিন্তু MGNREGS-এর তহবিল ও মজুরি হারের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানের অভাব দেখা যাচ্ছে, যা প্রকল্পের কর্মক্ষমতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

গত বছর মজুরি হারে প্রায় ৫-৭% বৃদ্ধি এসেছে, কিন্তু MGNREGS তহবিল বৃদ্ধির হার এর চাইতে অনেক কম। এই পার্থক্যের কারণে পেশাদার ও আধা-দক্ষ শ্রমিকরা এই স্কিমের কাজ এড়িয়ে যেতে পারে, কারণ তাদের মজুরি কম হওয়ার ফলে তারা অন্য খাতে চলে যাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, MGNREGS-এর তহবিল বৃদ্ধি করা জরুরি, যাতে:

  • মজুরি হার মুদ্রাস্ফীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে,
  • গ্রামীণ শ্রমিকদের আকর্ষণ বাড়ে,
  • কাজের গুণগত মান উন্নত হয়।

বর্তমানে সরকারি তহবিল ও মজুরি বৃদ্ধি নিয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে যা দ্রুত সমাধান না হলে কর্মসংস্থানের সংখ্যা আরও কমতে পারে।

এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কিছু প্রস্তাব:

  1. মজুরি হার নিয়মিত আপডেট করা।
  2. তহবিল বরাদ্দ বাড়ানো, বিশেষ করে স্কিমের বেশি কর্মব্যস্ত মাসগুলোতে।
  3. সামাজিক নিরাপত্তার অন্যান্য কার্যক্রমের সাথে সংহত করা।

এভাবেই MGNREGS কর্মীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপের মাঝে এই সমন্বয় হারানো গেলে ক্ষতিটা পড়বে সেই শ্রমিক ও গ্রামীণ পরিবারের ওপর, যারা এখনো ও প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল।

এই বিস্তারিত বিষয়গুলো নিয়ে আধুনিক গবেষণা ও রিপোর্ট পড়তে পারেন এখানে থেকে: MGNREGS কাজের চাহিদা এবং অর্থনৈতিক প্রভাব

নীতিনির্ধারকদের জন্য সুপারিশ

২০২৫ সালের অগাস্টে MGNREGS-এ কাজের চাহিদার ২৫% কমে যাওয়া স্পষ্ট করে দেয় যে গ্রামীণ অর্থনীতির পরিবর্তিত বাস্তবতা বুঝতে সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের ক্রমাগত আপডেট হওয়া তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধুমাত্র অতীতের পরিকল্পনা অনুসরণ করলেই চলবে না; পরিসংখ্যান, আবহাওয়া, অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র অনুসারে কর্মসূচির কাঠামো ও বাজেট প্রণয়ন করা জরুরি। নিচে কিছু মূল ধারনা তুলে ধরা হলো যা নীতিনির্ধারকদের জন্য দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজে আসবে।

ডেটা-ভিত্তিক তহবিল বরাদ্দ: কাজের চাহিদা ও আবহাওয়া তথ্য ব্যবহার করে তহবিলের পুনর্বন্টনের প্রস্তাব দিন

MGNREGS-এর তহবিল বরাদ্দে নতুন মাত্রা আনার সময় এসেছে। গ্রামীণ এলাকায় কাজের চাহিদা মৌসুম ও আবহাওয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৫ সালের খরিফ মৌসুমে বৃষ্টিপাতের ভালো প্রেক্ষাপটে কৃষি কাজ বৃদ্ধির কারণে সরকারী কর্মসংস্থানের চাহিদা কমেছে। এর মানে এই নয় যে তহবিল কমানো উচিত, বরং বরাদ্দ নির্ধারণের সময় এই পছন্দ পরিবর্তনগুলোর মাপকাঠি ব্যবহার করতে হবে।

কীভাবে করা যেতে পারে:

  • মৌসুমি ডেটা বিশ্লেষণ: বৃষ্টিপাত ও কৃষির কাজের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রত্যেক জেলা বা ব্লকের বরাদ্দ মাস ভিত্তিক সামঞ্জস্য করা।
  • চাহিদা পরিবর্তনের পূর্বাভাস: গত কয়েক বছরের ডেটা কাজে লাগিয়ে সম্মিলিত কর্মসংস্থান চাহিদা টুল তৈরি করা যা আগে থেকেই তহবিলের পুনর্বিন্যাস সুপারিশ করবে।
  • ক্ষেত্রভিত্তিক ভিন্নতা স্বীকার করা: বৃষ্টিপাত কম বা কৃষি জিডকাল কম এমন এলাকায় অতিরিক্ত তহবিল বরাদ্দ করার মাধ্যমে কর্মসংস্থানে সমান সুযোগ নিশ্চিত করা।

ডেটা অন্তর্ভুক্তিকরণে সরকারের প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানো হলে নির্ভুল ফান্ড বরাদ্দ সম্ভব হবে, যা বাজেট অপচয় রোধ করবে এবং শ্রমিকদের প্রাপ্য জায়গায় পৌঁছে দেবে। এই তহবিলের পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া তথ্যনির্ভর ও স্বচ্ছ হলে স্থানীয় প্রশাসক এবং কৃষিজীবী নির্ভরতা বৃদ্ধিতে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

মজুরি সমন্বয় ও শর্তাবলী পুনর্বিবেচনা: ইনফ্লেশন, জীবনের ব্যয় এবং স্থানীয় শর্তের ভিত্তিতে মজুরি হারের পুনঃমূল্যায়ন সুপারিশ করুন

মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের বৃদ্ধি MGNREGS-এ কাজের আগ্রহ প্রভাবিত করছে। গত বছর মজুরি বৃদ্ধি সীমিত থাকায় কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আকর্ষণ কমে। প্রকৃতপক্ষে, স্বল্প পারিশ্রমিক নীতি শ্রমিকদের অন্য খাতের দিকে ধাবিত করেছে, যার ফলে কর্মসংস্থানের স্বল্পতা বেড়েছে। নীতিনির্ধারকদের এখানেই হস্তক্ষেপ করা দরকার।

কোন দিকগুলোতে মনোযোগ জরুরি:

  • মজুরি হার পুনঃমূল্যায়ন: কৃষি ও রোজগার খাতের বর্তমান বাজার মজুরির সঙ্গে তুলনামূলকভাবে MGNREGS-এ মজুরি হার নির্ধারণ।
  • জীবিকার হ্রাস রোধে অতি প্রয়োজনীয় শর্তাবলী: শ্রমিকদের কাজ পাওয়ার সুযোগ বাড়াতে কাজের সময়সূচী ও শর্তাবলী বেশি নমনীয় ও স্থানীয় চাহিদা অনুযায়ী ঠিক করা।
  • মজুরি পরিশোধের স্বচ্ছতা: সময়মত ও সম্পূর্ণ মজুরি প্রদানের গ্যারান্টি নিশ্চিত করা, যাতে শ্রমিকদের মধ্যে বিশ্বাস বজায় থাকে।

স্থানীয় বাজার ও দামের ওঠানামা মাথায় রেখে সময়ে সময়ে মজুরি হার আপডেট করা হলে শ্রমিকদের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়বে। একই সঙ্গে, কাজের গুণমান ও কর্মদক্ষতাও বাড়বে, কারণ শ্রমিকরা যথাযথ পারিশ্রমিক পেলে বেশি উৎসাহে ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে।

গতকালের তুলনায় আজকের বাজারে খরচ বৃদ্ধির কথা বিবেচনা না করলে প্রকল্পে অংশগ্রহণের হার আরও পড়তে পারে। সুতরাং, মজুরি ও কর্মসংস্থানের শর্তাবলী নিয়মিত আপডেট ও সুবিচার সুদৃঢ় করার মাধ্যমে কর্মদক্ষতা ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব।

Children studying in a rustic educational setting in rural India.
Photo by Kavya Kodiya

এভাবে নীতিনির্ধারকরা ডেটা ও বাস্তবতা মিশিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করলে, MGNREGS-এর কার্যকারিতা অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য সফল হবে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য পড়তে পারেন এই প্রতিবেদনটি

উপসংহার

MGNREGS-এ কাজের চাহিদা ২৫% কমে যাওয়া স্পষ্ট করে দেয় গ্রামীণ অর্থনীতির সামগ্রিক শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভালো বৃষ্টি ও কৃষি কাজের বর্ধিত সুযোগ শ্রমিকদের সরকারি কর্মসংস্থানে নির্ভরতা কমিয়েছে, একই সঙ্গে শিল্প ও সেবা খাতে নতুন কাজের সুযোগ বাড়ছে। এই পরিবর্তন গ্রামীণ অর্থনীতির স্বাভাবিক ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠার পরিচয় বহন করে।

তবে MGNREGS এখনো দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষাবলয়। নীতিনির্ধারকদের উচিত তহবিল ও মজুরি হার ঠিকভাবে সমন্বয় করে প্রকল্পটিকে শক্তিশালী করা, যাতে এর পেছনে থাকা মানুষ ভালোভাবে লাভবান হয়।

সমাজের সব স্তর থেকে সচেতনতা বাড়িয়ে, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক নীতিতে এসব পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিতে হবে। গ্রামীণ অর্থনীতির আগামী দিনগুলোকে আরো স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ করতে, MGNREGS-এর ভূমিকা ও পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখা জরুরি।

Click here